মো.মাইনুল ইসলাম,সাভার প্রতিনিধিঃ
ঢাকা জেলার সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সংবাদ প্রকাশের জেরে আটক প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সাভারের নবীনগর এলাকায় অবস্হিত জাতীয় স্মৃতি সৌধের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে সাভার আশুলিয়া ধামরাইয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা এ আল্টিমেটাম দেয়।
এ সময় সাংবাদিকরা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমাদের সহকর্মী শামসুজ্জামান শামসকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার সহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে কালো আইন আখ্যা দিয়ে সেই আইন বাতিলের দাবিও জানান।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) এবং সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিকদের ব্যানারে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয় । এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শতাধিক সাংবাদিক অংশ নেয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা দিবসের দিনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। সংবাদে ছবি ও ক্যাপশনে অসঙ্গতি থাকায় ১৭ মিনিটের মাথায় সেই কার্ডযুক্ত ছবি প্রত্যাহার করে প্রথম আলো। সেই সংবাদের প্রেক্ষিতে পাল্টা সংবাদ পরিবেশন করে বিতর্ককে উসকে দেয় একটি বেসরকারি টেলিভিশন। ওই টেলিভিশনের সাংবাদিক সংবাদ প্রকাশের পর মূল ঘটনাকে বাদ দিয়ে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে শামসুজ্জামান শামসের নামে কোনো ধরনের মামলা ও অভিযোগ ছাড়া ভোররাতে সিআইডি পুলিশ পরিচয়ে ভাড়া বাসা থেকে আটক করে নির্যাতনের প্রেক্ষাপট তৈরি করে দেয়।
বক্তারা বলেন, টেলিভিশনটিতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গতকাল গভীর রাতে শামসুজ্জামান শামসকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন তাকে তুলে নিতে সহযোগিতা করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেখে ফেলার পরেও কোন ধরনের খোঁজ খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টির সত্যতা প্রকাশ করতে হয়েছে স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। এ বিষয়টি অনেকটা উদ্বেগের।
বক্তারা আরো বলেন, শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়ার ৩০ ঘন্টা পর আদালতে তোলা হয়েছে। যা আদালত অবমাননার শামিল। শামসুজ্জামান শামস শুধু একজন সাংবাদিক নয়। তিনি যেই মায়ের সন্তান সেই মায়ের সন্তান ছিলেন রাজধানীর হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার নিহত শহীদ ডিবি পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার( এএসপি) রবিউল ইসলাম।
শামসকে তুলে নেওয়ার সময় সাদা পোশাকে থাকা কয়েকজন দাবি করে প্রকাশিত প্রতিবেদনের জন্য রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয় যেই মায়ের পেটে রবিউল ইসলামের মত দেশপ্রেমীক পুলিশ কর্মকর্তার জন্ম হয় সেই মায়ের পেটে জন্ম নেওয়া শামসুজ্জামান কখনোই রাষ্ট্রবিরোধী হতে পারেন না। তাই আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি না দেওয়া হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন সাংবাদিক নেতারা।
Leave a Reply