মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
যশোরের অভয়নগরে গরু বাঁধাকে কেন্দ্র করে নাসিমা বেগম (৪৭) নামের এক ন পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর ড্রাইভার শাহিনুর মোল্যা ও একই ইউনিয়নের দফাদার আমিনুর মোল্যার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের মাগুরা শেখপাড়া এলাকায়। এ ব্যাপারে অভয়নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত নারীর সন্তান। মারাত্মক নীলাফোলা জখম অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন ঐ নারী । তিনি মাগুরা শেখপাড়া এলাকার মোতাহার মোল্যার স্ত্রী। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রেমবাগ ইউনিয়নের মাগুরা শেখপাড়া এলাকার মৃত তাইজুল মোল্যার ছেলে শাহিনুর মোল্যা ও আমিনুর মোল্য দীর্ঘদিন ধরে আহত নারীর স্বামী মোতাহার মোল্যার জমি দখল করার পায়তারা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল আনুমানিক ১০টায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঝগড়া ফ্যাসাদ করার জন্য তাদের বাড়ির পাশের জমিতে ৩/৪ টি গরু বেঁধে রেখে যায় তারা।
আহত নারীর ছেলে শাকিল মোল্যা এ প্রতিবেদককে জানান, তার মা নাসিমা বেগম তাদের জমিতে শাহিনুর মোল্যাকে গরু বাঁধতে দেখে জমিতে গরু বাঁধার কারণ জানতে চায়। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা একই গ্রামের আশরাফুল মোল্যা,বাবু মোল্যা, ঝর্ণা বেগম হাতে বাঁশের লাঠি ও দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহিনুর মোল্যার নির্দেশে আশরাফুল মোল্যা তার মাকে ঝাপটে ধরে এবং আমিনুর মোল্যা এলোপাথাড়ি আঘাত করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফোলা জখম করে। আহত নাসিমা বেগমের ছেলে আরও জানান, শাহিনুর মোল্যা তার মায়ের পরিহিত কাপড় চোপড় টেনে হিঁচড়ে ছিড়ে দিয়ে শ্লীলতাহানী করে। আহত নাসিমা বেগম ডাক চিৎকার দিলে আমিনুর মোল্যা তার মুখ চেপে ধরে এবং শাহিনুর মোল্যা বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করলে ডান হাতের কনুই মারাত্মক হাড়ফাঁটা জখম হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আশরাফুল মোল্যা ও ঝর্ণা বেগম তার মাকে এলোপাথাড়ি কিল,ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। মারামারির এক পর্যায়ে আশরাফুল মোল্যা তার মাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরে।
এবং গলায় থাকা আট আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায় তারা। শাকিল মোল্যা আরও জানান, আমার মায়ের ডাক চিৎকারের এক পর্যায়ে প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে তারা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। তার মায়ের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি তার মায়ের উপর ঘটে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। এ ব্যাপারে প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার আমিনুর রহমান মুঠোফোনে জানান, মহিলাদের মধ্যে ঝগড়া ও কথাকাটাকাটি হয়েছে। ঘটনাস্থলে আমি এবং আমার ভাই শাহিনুর মোল্যা উপস্থিত ছিলাম না। আমি মাঠে ছিলাম । ঝগড়া হয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তিনি আরও বলেন, গরু বাঁধা ছিল আমাদের জমিতে। একটি মহল আমাদের ফাসানোর চেষ্টা করছে। ঐ মহিলা একজন চোগলখোর ।
তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা সহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এবং স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার মতো এমন কিছু ঘটেনি। এ ব্যাপারে প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, মারামারির বিষয়ে ভুক্তোভুগী ও তার পরিবার আমি সহ ওয়ার্ড মেম্বার কে কিছুই জানায়নি। ৯৯৯ ফোন করে পুলিশে অভিযোগ দিলে পুলিশের মাধ্যমে আমি জানতে পারি। শুনেছি দুই পক্ষের মহিলাদের সাথে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া হয়েছে। মারামারির ঘটনাটি তাদের পারিবারিকভাবে ঘটেছে। তবে নাসিমা বেগমের নামে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত ) মিলন কুমার মন্ডল জানান, শনিবার আমি বাগেরহাটে ব্যস্ত ছিলাম। এরকম কোনো অভিযোগ আমার কাছে এখনও আসেনি। তবে অভিযোগ হয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply