মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
লিচুর জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উঠতে শুরু করেছে অপরিপক্ক লিচু। প্রতি ১’শ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে এসব অপরিপক্ক লিচু কিনছেন অসচেতন ক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম লিচু বিক্রি করলে দাম একটু বেশি পাওয়া যায়। তাই তারা বেশি লাভের আশায় আগে ভাগে বাগান থেকে এই লিচু সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন।
কৃষি অধিদপ্তর বলছে, লিচুর প্রকৃত সময় আসতে এখনো দুই সপ্তাহ বাকি। বর্তমানে বাজারে যেসব লিচু উঠেছে সেগুলো অপরিপক্ক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, অপরিপক্ক লিচু খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ মারাত্মক শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
সোমবার সকালে ফুলবাড়ী পৌর শহরের কালিবাড়ী বাজার এবং নিমতলা মোড়ে এসব লিচু বিক্রি করতে দেখা যায়। এই লিচু দেখে অনেকেই আগ্রহ করে কিনছেনও। ক্রেতাদের অনেকেই বলছে, অপরিপক্ক এই লিচুর স্বাদ নেই খেতেও টক। রোদের তাপে ওপরে একটু লাল রং ধারণ করেছে মাত্র। বছরের প্রথম ফল তাই অল্প করে হলেও কিনছেন তারা।
ফুলবাড়ী পৌর শহরের লিচু বিক্রেতা স্বাধীন ও হেলাল জানান, বছরের প্রথম বাজারে লিচু নিয়ে এসেছি। এসব মাদ্রাজি জাতের স্থানীয় লিচু । আগাম লিচু বিক্রি করলে দাম একটু বেশি পাওয়া যায়, লাভ বেশি হয়। তাই বাগান থেকে লিচু সংগ্রহ করে বিক্রি করছি।
আগাম লিচুর বিষয়ে কথা হয় ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, উপজেলায় ৬৮ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। লিচু পুরোপুরি পরিপক্ক হতে এখনো ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। এখন বাজারে যেসব লিচু বিক্রি হচ্ছে তা অপরিপক্ক (কাঁচা)।
দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম বোরহান-উল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, এই লিচুতে যে এনজাইম গুলো দেয়া থাকে, এই এনজাইম গুলো যদি খালি পেটে কেউ খায় সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় লিচু খেয়ে বাচ্চা মারা যাওয়ার যে খবর আমরা পাই, অপরিপক্ক লিচু থেকেই এই সমস্যাটা হয়।
তিনি আরও বলেন, লিচুতে যে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়, তা সলুশন হওয়ার জন্য একটা সময় দেয়া লাগে। লিচু যদি কীটনাশক যুক্ত অবস্থায় থাকে তবে এটি মানব দেহের জন্য ভয়ঙ্কর ব্যাপার। এ কারনে কিডনি বিকল হতে পারে, লিভার ড্যামেজ, ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিসহ মারাত্মক শারীরিক সমস্যা হতে পারে। অপরিপক্ক লিচু না খাওয়াই ভালো। বিশেষ করে শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
Leave a Reply