রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেনের অনুসারীর বিরুদ্ধে এক দিনমজুরকে চড়-থাপ্পড়-লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরাও ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে ক্ষমা চেয়ে পার পান ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও তার কয়েকজন অনুসারী। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে চেয়ারম্যান অসুস্থ হয়ে পড়লে রায়পুর শহরের মাতৃছায়া হাসপাতালে ভর্তি হন চেয়ারম্যান তাফাজ্জল।
শনিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, কে বা কারা ওই দিনমজুরকে লাথি মেরেছে, তা আমার জানানাই। তবে- ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহ্ববায়ক সুমন পাটোয়ারী ও তার অনুসারী তুহিন বিধিবর্হিভূতভাবে পরিষদে প্রবেশ করে। এসময় দলের নেতাকর্মীদের চাউলের কার্ড না দিলে কয়েকজন কর্মীকে দিয়ে আমাকে লাঞ্চিত করলে ঘটনাস্থলে আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়ি। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি নিবো।
ভুক্তভোগী দিনমজুরের অভিযোগ, তার কাছে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত দুটি টোকেন ছিল। ওই টোকেনগুলো নিয়ে তিনি চাল নিতে পরিষদে যান। দুটি টোকেন দেখেই চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার দুইজন অনুসারী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে চড়থাপ্পড় মারেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে ভিজিএফের আওতায় ইউনিয়নের দুস্থদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। এর আগে দুস্থদের মাঝে ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেনের স্বাক্ষরিত টোকেন সরবরাহ করা হয়েছে। ওই টোকেন নিয়েই তারা চালের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যান। ওই দিনমজুর চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত দুটি টোকেন পেয়েছেন। ওই টোকেনগুলো নিয়েই চাল নিতে যান। অতিরিক্ত টোকেন নিয়ে আসায় চেয়ারম্যানের লোকজন তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে লাঞ্ছিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, একাধিক টোকেন নিয়ে যে কেউ চাল নিতেই পারে। পাড়া প্রতিবেশীদের চাল একজনে গিয়ে পরিষদ থেকে নিয়ে আসে। ওই দিনমজুর একাধিক টোকেন নিয়ে চাল নিতে গিয়ে কোনো অন্যায় করেননি।
বামনী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহবায়ক সুমন পাটোয়ারী বলেন, কোনো অসহায় লোকের গায়ে হাত তোলা অপরাধ। ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন কাজটি ঠিক করেননি। বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে চেয়ারম্যান অসুস্থ্য দেখিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বলছেন।
বামনী ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ভিজিডির কার্ড ও চাউল বিতরন নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও তাদের দলের নেতার্মীদের সাথে বাকবিতন্ডা ও উত্তেজনা দেখা দেয়। তাৎক্ষনিক পিআইওসহ চারজন কর্মকর্তা ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে।
Leave a Reply