মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের টেষ্ট বানিজ্যের খেলায় ডাক্তার ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ , দালাল চক্রদের যোগসাজশে সেবা নিতে আসা রোগীদের নাজেহাল- হয়রানির কোন শেষ নেই। ফলে প্রতিদিন অভয়নগর উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে ছুটে আসা রোগীরা হচ্ছে নাজেহাল সহ নানামুখী দালাল চক্রের হয়রানির শিকার। সরেজমিনে দেখা যায়, এক একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত ৩ থেকে ৪ জন ব্যক্তিরা রোগীদের হাতে থাকা বিভিন্ন টেস্টের ব্যবস্থাপত্র কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে নিজেদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেনে নিয়ে যায়। সেখানে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো রোগীদের কাছ থেকে টেষ্টের নামে লুটে নেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। যার দিনওয়ারী স্ব- স্ব ডাক্তারকে কমিশন দিতে হয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর। অন্যদিকে ডাক্তারদের মনমতো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সকল প্রকার টেস্ট করা লাগবে, না হলে চিকিৎসা সেবা থেকে রোগীদের বঞ্চিত করা হয়ে থাকে। যে কারনে রোগীদের ডাক্তারের কথা অনুযায়ী সেই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই বাধ্য হয়ে বিভিন্ন টেষ্ট করা লাগে। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের অর্থনৈতিক টেস্ট বানিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসার পরেও সিভিল সার্জনসহ দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়না কোন ধরনের শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা। ফলে দিনদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকসহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর অপরাধ অনিয়ম এখন রোগীদের মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। কমিশন টেষ্ট বানিজ্যের সাথে যে সকল ডাক্তার দালালসহ ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো জড়িত তারা হলঃ ডাঃ মাহমুদুর রহমান রিজভী, ইউনিক ও লাইফ কেয়ার, নিয়োজিত সহকারী রফিক। ডাঃ আলিমুর রাজীব (এম বি বি এস) লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত হাবিব। ডাঃ শোভন বিশ্বাস (এম বি বি এস) পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত সোহাগ।
ডাঃ বাহারুল ইসলাম (এম বি বি এস) পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও সপ্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নিয়োজিত সবুজ। ডাঃ সোহানা আজমিন উর্মি (এম বি বি এস), পালস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত প্রতিমা। ডাঃ রাকিবুল ইসলাম (এম বি বি এস) পালস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত রাসেল। ডাঃ শায়লা শারমিন তিথি (এম বি বি এস) ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত শাপলা। ডাঃ মামুনুর রশীদ (এম বি বি এস) ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত মিকাইল। ডাঃ সিনথিয়া নুর চৈতী (এম বি বি এস) ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত নাইম।
ডাঃ জসিম উদ্দিন (এম বি বি এস) ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত আজিজ। ডাঃ মরিয়ম মুনমুন (এম বি বি এস) এবি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিয়োজিত মেহেদী। চিকিৎসক শাহিনুর রহমান, পালস ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ডাঃ শাহরিয়ার হান্নান, ফয়সাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এছাড়াও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর নিয়োজিত দালান চক্ররা ওই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িয়ে প্রতিদিন শতশত চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীসহ স্বজনদের হয়রানি নাজেহাল করে চলেছে। কিন্তু দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যায় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে ওই সব ডাক্তারগণের নিয়োজিত দালাল চক্রের কবলে পড়ে সাধারণ রোগীদের হয়রানি নাজেহাল এখন অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত টেষ্টের নামে কমিশন বানিজ্যের এক রকমারি কারবার হয়ে পড়েছে। ফলে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা রোগীদের সেবা পাওয়ার থেকে হয়রানিসহ নানামুখী নাজেহাল হতে হচ্ছে। জরুরি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়ম, অপরাধসহ টেষ্ট বানিজ্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ওহিদুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, তার স্বাক্ষাৎ পেতে অফিসে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি যে কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে যশোর জেলা সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান বলেন, আমার কাছে এবিষয়ে কোন তথ্য নেই, তবে এমনটি যদি হয়ে থাকে তদন্ত করে এমন কাজ না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply