মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
যশোরের অভয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয়ের সাবেক নাজির আলমগীর ও অফিস সহায়ক প্রবাস কুমারের ঘুষ বানিজ্যে ফাঁস হয়েছে। জানা গেছে আনুঃ ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে অভয়নগর উপজেলার ৮ নং সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের সোনাতলা বাজারে সরকারি খাশ জমি বন্ধবস্তের জন্য এলাকার অনেক মানুষের সাথে ব্যাপক ঘুষ বানিজ্য করা হয়।
ওই ঘুষ বানিজ্যের খবর তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) থান্দার কামরুজ্জামানের নজরে আসলে তৎকালীন অভয়নগর সহকারী ভূমি অফিস কার্যালয়ে কর্মরত নাজির আলমগীর হোসেনকে যশোর জেলা প্রসাশক কার্যালয়ে বদলী করা হয়। আলোচিত নাজির আলমগীর এখনো যশোর ডিসি অফিসেই কর্মরত আছে। অন্যদিকে তৎকালীন অভয়নগর ভূমি অফিস কার্যালয়ে নাজির আলমগীর থাকা অবস্থায় বর্তমান উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত অফিস সহায়ক প্রবাস কুমার দু'জন যোগসাজশে সরকারি জমি বন্ধবস্ত দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা অসহায় ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে গ্রহন করার একাধিক অভিযোগ আছে। অনেকে সরকারি জমি অথবা ঘুসের টাকা ফেরত পেতে বিভিন্ন সময় ঘুরে ঘুরে বেড়ালেও প্রতারক আলমগীর ও ওই ভন্ড প্রতারক প্রবাস কুমার গ্রহন করা টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করছে। সরকারি জমি বা ঘুসের টাকা ফেরত না পেয়ে ভুক্তভোগীরা দারে দারে ঘুরছে। এমনই এক ভুক্তভোগী সোনাতলা গ্রামের মৃত- জলিল শেখের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, নাজির আলমগীর ও অফিস সহায়ক প্রবাস কুমার দুইজন মিলে আমাকে সরকারি ১ শতাংশ জমি বন্ধবস্ত দিতে চেয়ে দেড় লাখ টাকা দাবি করেন, আমি গরীব অসহায় মানুষ স্ত্রীর স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে ও বাড়ির গরু বিক্রি করে অনেক কষ্টে এক লাখ টাকা গুছিয়ে প্রবাস ও আলমগীরের হাতে দিয়েছি। আমাকে কোন টাকার রশিদ বা সরকারি জমি না দিয়ে অন্যদের থেকে বেশি টাকা নিয়ে তাদের ঐ সরকারি জমি দিয়েছে।
আমি টাকা ফেরত চাইলে তারা দুইজন বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে এবং আজ না কাল এভাবে ঘুরাইতেছে কিন্তু আমার এক লাখ টাকা ফেরত দিচ্ছেনা। আমি জমি আর চাইনা আমার ওই এক লাখ টাকা ফেরত চায়। অন্যদিকে সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম তার টাকা ফেরত পেতে সাংবাদিকদের জানানোর কারণে প্রতারক আলমগীর ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন লোভ লালসা দেখিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী প্রবাস কুমার জমি দেওয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা গ্রহন করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি আর আলমগীর মিলে টাকা নিয়েছিলাম ঠিক কিন্তু আমার কাছে কোন টাকা নেই সব টাকা ওই নাজির আলমগীর সাহেবের কাছে। আমি তাকে অনেক বার বলেছি গরীব রফিকুলকে এক লাখ ফেরত দিতে। কিন্তুু আলমগীর বিভিন্ন সময় নিয়েও টাকা ফেরত দিচ্ছেনা। আমিও চাই রফিকুল টাকাটা ফেরত পাক। এবিষয়ে যশোর জেলা প্রসাশক কার্যালয়ে কর্মরত নাজির আলমগীর হোসেন বলেন, টাকা দ্রুতই ফেরত দেওয়া হবে। কবে ফেরত দিবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রবাসের সাথে আলোচনা করে কবে ফেরত দিবো জানিয়ে দিবো।
এবিষয়ে অভয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শামীম হোসাইন বলেন, ওই দু'জন যদি জমি দেওয়ার কথা বলে টাকা গ্রহন করে থাকেন, তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভুক্তভোগীকে আমার সাথে এসে দেখা করতে বলেন বিষয়টি আমি সমাধান করবো।
প্রধান কার্যালয়, মিরপুর-১৩,ঢাকা
Copyright © 2024 দৈনিক অপরাধ তল্লাশি. All rights reserved.