মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
সমুদ্রে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গতকাল সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়েছে। পাকা ধান জমিতে পড়ে থাকলেও একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে ধানের ধান কম থাকায় ধান কাটতে না পেরে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ফুলবাড়ী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে ৯৬ হাজার ৫শ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
সরেজমিনে গতকাল সোমবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইরি-বোরো মৌসুমে যেসব ধান আগে পাকে অর্থাৎ ব্রি-১৬, ব্রি-২৮, মিনিকেট ধান কাটা শেষ হলেও মাঠজুড়ে রয়েছে ব্রি-২৯ জাতের ধান। ফুলবাড়ীতে ব্রি-২৯ ব্যাপক হারে চাষ হলেও কাটা হয়েছে এক চতুর্থাংশ মাত্র। বাঁকি ধান দুই সপ্তাহের মধ্যে কাটা শেষ হবে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সৃষ্ট নিম্নচাপের বৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। দ্বিগুণ দামেও মিলছেনা ধানকাটা শ্রমিক। এদিকে এক দিনের ব্যবধনে ধানের দাম কমেছে বস্তা প্রতি ৫০ থেকে ১০০টাকা। ফলে মাঠেই পড়ে আছে কৃষকের পাকা ধান। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ধান চাষীরা।
উপজেলার শিবনগর ইউপির দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম জানান, তার দুই একর জমির মধ্যে এক একর জমির ধান কাটা হয়েছে। বাঁকি এক একর জমির ধান সোমবার কাটার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে কাটা সম্ভব হচ্ছে না। পাকা ধান জমিতে থাকলে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
একই ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের কৃষক স্টেফান মার্ডি জানান, গাছ পড়ে না গেলে দু একদিনে তেমন ক্ষতি হবে না। তবে বৃষ্টিপাত আরও বেশি হলে এত কষ্টের পাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে। বৃষ্টিতে ধানের দাম কম আবার ভেজা ধান কেটে শুকানোর মত জায়গাও নাই।
নাম প্রকাশে কয়েকজন ধান ব্যবসায়ী জানান, বৃষ্টির কারণে ধান কিনতে পারছেন না তারা। গত রোববার প্রতি মণ ধানের দাম ছিল মিনিকেট ১১শ, হাইব্রিড ৮৫০, ব্রি-২৮ ধান ১হাজার, ব্রি-২৯ ধান ৯শ টাকা। তবে সোমবার সারাদিন বৃষ্টির কারনে ধানের দাম মণ প্রতি ৫০ থেকে ১০০টাকা কম।
Leave a Reply