মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে এবছর কোরবানির চাহিদার তুলনায় প্রায় ৩হাজার পশু বেশি প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই দেশি জাতের। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে।
ক’দিন পরেই পুরোদমে শুরু হবে কোরবানির পশু কেনাবেচা। তাই শেষ সময়ের প্রস্তুতি হিসেবে পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। এবার যে পরিমাণ দেশি গরু প্রস্তুত রয়েছে, তা দিয়েই কোরবানির চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে দাবি খামারিদের।
ফুলবাড়ী প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর এ উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার ২১২ টি। কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে ২০ হাজার ১০৫টি পশু । যা চাহিদার চেয়েও ২ হাজার ৮৯৩টি পশু বেশি। এর মধ্যে ষাড় ৮হাজার ৫১১টি, বলদ ১হাজার ৯৮টি, গাভী ১হাজার ৮৩৫টি, মহিষ ১২টি, ছাগল ৮হাজার ১২৩টি, ভেড়া ৫২৬টি।
সূত্র আরও জানায়, ফুলবাড়ী উপজেলায় গরুর নিবন্ধিত খামার রয়েছে ৪৪টি, ছাগলের ১টি ও ভেড়ার খামার রয়েছে ১টি। অনিবন্ধিত গরুর খামার রয়েছে ২৫৭টি, ছাগলের ১১০টি, ভেড়ার খামার রয়েছে ২৪টি। এছাড়াও কৃষক পর্যায়ে উপজেলায় দেশি গরু রয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ১৬৩ টি।
স্থানীয় খামারিরা বলছেন, এবার পর্যাপ্ত দেশি জাতের গরু পালন করেছেন। গরুকে খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস, খৈল, ভুট্টা এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেক বেড়েছে।
পৌর এলাকার স্বজন পুকুর এলাকার আমিন এগ্রো ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারের লোকজন। পৃথক দুটো সেডে একটিতে দেশি জাতের গরু, অপরটিতে বিদেশি জাতের গরু রয়েছে।
স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন বলেন, আমাদের খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুতকৃত ক্রস ব্রাহমা, শাহীওয়াল, নেপালি, হরিয়ানা ও দেশিসহ উন্নত জাতের প্রায় অর্ধশতাধিক গরু রয়েছে। এছাড়া উন্নত জাতের দুটো মহিষ রয়েছে।
আমিন এগ্রো ফার্মের ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, খামারে বর্তমানে শতাধিক গরু রয়েছে। এর মধ্যে দেশিসহ কোরবানির জন্য অর্ধশতাধিক গরু প্রস্তুত রয়েছে। প্রস্তুতকৃত গরু ৬০ হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হয়েছে। ইতমধ্যে ১০টি গরু বিক্রি হয়েছে।
এদিকে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হৃষ্টপুষ্টকরণ, প্রাকৃতিক উপায়ে পশু পালন এবং বাজারজাত করণে খামারিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, গরুকে দানাদার খাদ্য ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভিটামিন খাওয়াতেও বলা হচ্ছে খামারিদের। তবে গরুকে নিষিদ্ধ কোনো রাসায়নিক ও হরমোন ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।
তিনি বলেন, চলতি বছর এই উপজেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার ২১২টি। কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে ২০ হাজার ১০৫টি পশু । যা চাহিদার চেয়েও ২ হাজার ৮৯৩টি পশু বেশি। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি এসব পশু দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো সম্ভব হবে।
Leave a Reply