জুবেল আরেফিন, বিশেষ প্রতিনিধি রংপুর জেলাঃ
গত ১৫ দিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন ১৫ হাজার ৭৭১ জন রোগী। এদের মধ্যে ৩৩৭ জন রোগী মারা যায়।
গত কয়েক দিনের প্রচন্ড গরমে জ্বর,সর্দি, ডিসেন্ট্রি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্ত্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন। আগের মতো চিকিৎসা সেবার মান ভাল নেই এই হাসপাতালে। রোগীকে ভর্ত্তি হওয়া থেকে শুরু করে ওয়ার্ডে ডাক্তার দেখার পূর্ব মূহুত প্রর্যন্ত সেবা পেতে হলে প্রতি ধাপে ধাপে টাকা দিতে হয়। হাসপাতালের নার্স থেকে শুরু করে আয়া এমনকি পরিচ্ছন্ন কর্মীরাও টাকা ছাড়া কাজ করতে চায় না। টাকা দিতে না পারলে এখানে নার্সরাও রোগীর সাথে ব্যবহার ভালো করে না। ওয়ার্ডের ভিতর থেকে শুরু করে বাথরুম প্রর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় নোংরা,ময়লা ও আবর্জনা দেখা যায়। বেশির ভাগ ওয়ার্ডে পানির কোনো সুব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে পানি কিনে নিয়ে এসে খেতে হয় ওযুধ। গোসল করতে চাইলে বাইরে গিয়ে টাকা দিয়ে করতে হয়। টয়লেটগুলোতে দরজা নেই কিছু দরজা থাকলেও অধিকাংশ ভাংগা। টয়লেটের বিশ্রী গন্ধে আশে-পাশেও যাওয়া যায় না। এগুলো দেখার কেউ নেই,কতৃপক্ষ রীতিমতো উদাসীন। এগুলো বলতে গেলে নার্স, আয়া এমনকি ঝাড়ুদাররাও রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে খুব খারাপ আচরণ করেন। এগুলো বলার কারণে ইতিপূর্বে রোগী ও রোগীর স্বজনদেন সাথে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মারপিটের ঘটনাও ঘটেছে কয়েক বার।
তারপরেও বুক ভরা আশা নিয়ে এই হাসপাতালে আসেন আরোগ্য লাভের আশায় রোগী ও স্বজনরা। এছাড়াও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে অসংখ্য দালাল, যারা বিভিন্ন ক্লিনিক দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। তাদের কাজ হচ্ছে হাসপাতাল থেকে রোগীদের কে বিভিন্ন ভাবে ফুসলিয়ে ভালো চিকিৎসার কথা বলে তাদের পছন্দ মতো ক্লিনিকে বা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া। বিনিময়ে তারা রোগী ও ক্লিনিক উভয়ের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এগুলো ওপেন সিক্রেট। সবাই দেখলেও না দেখার ভান করেন। এ বিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ- পরিচালক ডাক্তার আখতারুজ্জামান বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তার এবং নার্স সংকট রয়েছে। প্রতিদিন এখানে যত রোগী ভর্তি হওয়ার কথা তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রোগী ভর্তি হয়। এ কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে ডাক্তাররা হিমশিম খাচ্ছেন।
তবে অতিরিক্ত গরমের কারণে হিটস্ট্রোক হয়ে এখনো কোনো রোগী ভর্তি হয়নি। যারা বলেছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে রোগী মারা গেছে,এটি ভুল তথ্য। কারণ প্রতিদিন স্বাভাবিক ভাবে নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে হাজারো রোগী এখানে ভর্তি হচ্ছেন এবং প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ জন রোগী হাসপাতালে মারা যায় বলে তিনি জানান।
প্রধান কার্যালয়, মিরপুর-১৩,ঢাকা
Copyright © 2024 দৈনিক অপরাধ তল্লাশি. All rights reserved.