মো.মাইনুল ইসলামঃ

সাভারে এক নারী পোশাক শ্রমিকের শিশু সন্তান ইমামুল হক (৮)গত ২১/৪/২৪ ইং ইমান্দিপুর এলাকা থেকে হারিয়ে গেলে শিশুটির মা পারুল বেগম সাভার মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করলে পুলিশ তদন্ত পূর্বক ভিকটিমকে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করেন। এবং ঘটনার সাথে জড়িত ভিকটিমের সৎ পিতা মুসলিম (৩৮)কে ও আর সহায়তাকারী মোশাররফ (৫২)কে আটক করে। শিশুটির সৎ পিতা নেশাগ্রস্ত মো.মুসলিম পাটোয়ারী (৩৮) পোশাক শ্রমিক মায়ের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে স্ত্রী পারুলের প্রথম স্বামীর ঔরসজাত পুত্র সন্তানকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করেন নেশাগ্রস্ত মুসলিম। পরে অভিযান চালিয়ে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থেকে সৎ বাবা মো.মুসলিম পাটোয়ারী ও তার সহযোগী মো.মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ।

শিশুটি অপহরণ,উদ্ধার অভিযান ও গ্রেপ্তার দুই আসামির স্বীকারোক্তি বিষয়ে বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর বিভাগ) আব্দুল্লাহিল কাফী, পিপিএম (বার) এ সময় সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম,সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাশিদ, সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন ও এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
ইমামুলের অবহাহরণকারী আসামিরা হলেন, চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার পদুয়া গ্রামের সুখ চাঁনের ছেলে মো. মুসলিম পাটোয়ারী (৩৮)ও একই উপজেলার সাহেদাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে মো.মোশারফ হোসেন (৫২) সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানায়, সাভারের ইমান্দিপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ২১ এপ্রিল বিকেল ৩ টার দিকে পোশাক শ্রমিক পারুল বেগমের প্রথম স্বামী তরিকুল ইসলামের ঔরসজাত ৮ বছরের শিশু পুত্র মো.ইমামুলকে অপহরণ করেন তারই সৎ বাবা মো.মুসলিম পাটোয়ারী ও তার সহযোগী মো.মোশারফ হোসেন। পুলিশ আরো জানায়, ইমামুলকে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও খেলনা কিনে দিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার পদুয়া পাটারি বাড়ি গ্রামে নেওয়া হয়। সেখানে মুসলিম পাটোয়ারী তার পরিচিত মোশারফ হোসেনের বাড়িতে ইমামুলকে রাখেন। এরপর থেকে পরিচয় লুকিয়ে বিভিন্ন নম্বর থেকে মুঠোফোনে কল করে শিশুটির মা পারুল বেগমের কাছে মুক্তিপণ চেয়ে এরপর এক ফোন করা হয়।
এ ঘটনায় ২২ এপ্রিল পারুল বেগম সাভার মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান উক্ত নিখোঁজ ডায়েরির তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন এবং পরে পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নামে। এরমধ্যেই অভিযুক্তদের দেওয়া ঠিকানায় গেলে পারুল বেগমকেও জিম্মি করা হয়। পুলিশ খবর পেয়ে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ২৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১১ টায় সন্দেহভাজন হিসেবে মুসলিম পাটোয়ারী ও মোশারফ হোসেনকে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদেরই দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটিকে কচুয়া থানার পদুয়া পাটারি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশ এবং গ্রেফতারকৃত আসামিদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেন পুলিশ।

এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহ্জামান পিপিএম বলেন, পঞ্চাশ হাজার টাকার জন্য সৎ বাবা শিশু ইমামুলকে অপহরণ করেছিলেন। এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। অবশেষে এঘটনার সঙ্গে জড়িত ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অপহৃত শিশুটিকে তার মা পারুল বেগমের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বার্তা প্রেরক : মো.মাইনুল ইসলাম সাভার ঢাকা।