রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে বামনী ইউপির চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে ভিজিএফের চাল চুরির অভিযোগ করেছেন তারই পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহিদুল আলম সুমন । এ ঘটনায় সোমবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সচিব, জেলা প্রশাসক ও রায়পুর প্রেসক্লাবে অনুলিপি পাঠিয়েছেন অভিযোগকারি মেম্বার মোঃ সুমন।
জানা যায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সারা দেশের মতো রায়পুর উপজেলার ৭ নাম্বার বামনী ইউপিতে চাল বরাদ্দ আসে প্রায় ২২০০ জনের নামে জনপ্রতি দশ কেজি করে ২২ টন।
গত শনিবার (৬ এপ্রিল) চাল বিতরণকালে ৭.৮.৯ নাম্বার ওয়ার্ডের বেশিরভাগ লোক পায়নি। পরে চাল চুরির অভিযোগ উঠলে চেয়ারম্যান তাফাজ্জাল হোসেন দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পালিয়ে বাড়ীতে চলে যান।
এই সময় বামনী ইউনিয়ন পরিষদে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা ভিজিএফ চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তালিকায় নাম ও টোকেন হাতে নিয়ে ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের সাগর্দি গ্রামের রাবেয়া বেগম, আশা বেগম, সামু আক্তার, সুন্দরি বেগম ও আমেনা বেগমসহ ২০ জন ব্যক্তি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সুমন বলেন, আমরা চেয়ারম্যানের ওপর কোনো কথা বলতে পারি না। আমাদের কোনো কথাই তিনি রাখেন না।
প্রতিটি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে পাওয়া তালিকা অনুযায়ী ভুক্তভোগীদের টোকেন দেয়া হয়েছে। কিন্তু চাল বিতরণের শেষ সময়ে পরিষদে আর চাল না থাকায় প্রায় ২০ জন বরাদ্দ পায়নি।
বামনী ইউপি সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান) জাহিদুল আলম সুমন বলেন, এই চেয়ারম্যান বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা থেকে শুরু করে; যা গরীব দুস্থদের মাঝে দেয়া হয়; তা দিতে বা কার্ড করে দিতে টাকা নেয়। টাকা ছাড়া কোনো কার্ড কেউ পায় না। আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেয়া ও রাস্তা করে দেয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে একাধিক।
ভিজিএফ চাল বিতরণকালীন টেগ অফিসার সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমি চাল বিতরণ শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত ছিলাম। তালিকাভুক্ত প্রতি টোকেনধারীকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে অনেক তালিকাভুক্ত টোকেনধারীরা চাল পায়নি।
রায়পুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশিকুর রহমান (পিআইও) জানান, বামনী ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রায় ২২ টন চালের ডিও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান সেই বরাদ্দকৃত চাল ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গেছেন। কেন ২০ জন চাল পেলো না তা তদন্ত করে দেখতে হবে।
অভিযোগ অস্বীকার করে বামনী ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল হোসেন জানান, প্রতিবার চাল দেয়ার সময় কার্ড বা টোকেনবিহীন কিছু ব্যক্তি আসেন। তাদেরও কম বেশি করে চাল দেয়া হয়। এ সময় ইউণিয়নের কয়েকজন নেতাকর্মী পরিষদে এসে চাল নিয়ে গন্ডগোল করে। তারা আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করে হয়রানি করছে। বাড়তি কোনো চাল দিতে না পারায় অনেকের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে রায়পুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইমরান খান বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি। সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে কোনো টোকেনধারী ব্যক্তি চাল নিতে এসে ফেরত না যায়। তবে কেন এত টোকেনধারী ব্যক্তি চাউল পেল না তা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।
Leave a Reply