মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে গত সোমবার (১১মার্চ) সকালে শিবনগর ইউনিয়নের ফুলবাড়ী কোল্ড ষ্টোরেজ সংলগ্ন ডার্কি ডোবা কালভার্টের উপর থেকে মেনহাজুল ইসলাম (৫০) নামের এক ভাঙারী ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ওই দিনই ময়না তদন্তের জন্য এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। মরদেহ উদ্ধারের ১৫ঘন্টার মধ্যেই দুই ঘাতককে আটক করে প্রশংসায় ভাসছে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন উপজেলার ১নং এলুয়ারী ইউপির খাজাপুর গ্রামের মৃত কফুর মোল্লার ছেলে রোস্তম মোল্লা (৫৫) ও একই উপজেলার ৭নং শিবনগর ইউপির গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের মো. রমজান আলীর ছেলে হেলাল উদ্দীন (৩২)। আটক দুজনই নিহত মেনহাজুলের সহযোগী ছিলেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, মেনহাজুল হত্যা মামলাটি একটি ক্লু লেস মামলা। লাশের গায়ে কোন ধরনের দাগ বা চিহ্ন ছিলনা। দক্ষতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ধৃতদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ১৬৪ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এর সাথে জড়িত পলাতকদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফুলবাড়ী থানার উপপরিদর্শক আরিফুল ইসলাম জানান, কোন রকম সূত্র ছাড়াই হত্যাকান্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত এটি একটি চোর চক্র। যেহেতু এটি তদন্তাধীন, তাই এর বেশি প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ফুলবাড়ী সার্কেল) ফরহাদ হোসেন জানান, ফুলবাড়ী থানার চৌকশ পুলিশ সদস্যদের নিরলস পরিশ্রম স্বার্থক হয়েছে। এত দ্রুত এমন একটি ক্লু লেস মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ আসামী গ্রেফতার হয়েছে। লাশ উদ্ধারের ১৫ ঘন্টার মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে দুজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার রোস্তম মোল্লাকে উপজেলার বেজাই মোড় হতে সোমবার রাত ৮টায় ও হেলাল উদ্দীনকে শিবনগর ইউপির গঙ্গাপ্রসাদে তার নিজ বাড়ি হতে রাত ১২টায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পরদিন আদালতে প্রেরণ করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এমামলার বাকি আসামীদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত রবিবার (১০মার্চ) দুপুরে খাওয়ার পরে বাড়ি থেকে বের হন ভাঙারী ব্যবসায়ী পৌরশহরের পশ্চিম গৌরীপাড়ার ইউসুফ আলীর ছেলে মেনহাজুল ইসলাম (৫০)। রাতে বাড়িতে না ফিরলে তার স্ত্রী ফুলোবানু খুঁজতে থাকেন। পরদিন সকালে ফুলবাড়ী কোল্ড স্টোরেজ সংলগ্ন একটি কালভার্টের উপর তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাশের ছবি ছড়িয়ে পড়লে তার স্ত্রী মেনহাজুলকে সনাক্ত করেন। পরে লাশ উদ্ধার করে দিনাজপুর মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। ওই দিনেই দুই আসামীকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় প্রশংসায় ভাসছে পুলিশ।
Leave a Reply