শেখ মোঃ হুমায়ুন কবির, স্টাফ রিপোর্টারঃ
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর। গাজীপুরের কিংবদন্তি, শ্রীপুর তথা গাজীপুরের গর্ব। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, বর্ষীয়ান রাজনীবিদ, সাবেক সফল মন্ত্রী, বিজ্ঞ পার্লামেন্টরিয়ান, ৬০ বছরের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বাংঙ্গালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, শ্রীপুর মা মাঁটির সন্তান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অ্যাড. মোঃ রহমত আলী এমপি’র (৪’র্থ) মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি’র সদস্য, আদর্শ ও সেবামূলক সমাজ কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ শ্রীপুর উপজেলা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মোহাম্মদ আলী (বি.কম)।
শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে তিনি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এ্যাডভোকেট মোঃ রহমত আলী ১৯৪৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের শ্রীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আছর আলী ও মাতা শুক্কুরজান বিবি। সংসার জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এ্যাডভোকেট মোঃ রহমত আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১১বছর বয়সে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় হোন। ১৯৬২ সালের ১৭’ই এপ্রিল শ্রীপুর হাই স্কুল মাঠে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে গ্রেফতার হন। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে গ্রেফতার হয়ে তিনি ৩ মাস কারাভোগ করেন। ১৯৬৬ সালের ৭’ই জুন তেজগাঁও শিল্প এলাকায় মিছিলে নেতৃত্ব দেন এবং গ্রেফতার হন। তিনি ১৯৬৮ সালে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের পক্ষে প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কলকাতার ৮ নম্বর থিয়েটার রোডে মি. বুশ ও জি এম চ্যার্টাজীর সঙ্গে সমন্ব্য় করে ফ্লাইট কুরিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল ১৯ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষকলীগের নবগঠিত কমিটিতে প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের পদ লাভ করেন। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শতাধিক বস্তিবাসী পরিবারকে দিনাজপুরে পুনর্বাসিত করেন। ১৯৭৪ সালে কৃষকলীগের সাধারণন সম্পাদক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক পদ লাভ করেন। ১৯৭৬ সালের ১০’শে জুলাই মতিঝিলের কমার্শিয়াল কো-অপারেটিভ ব্যাংক থেকে গ্রেফতার হন এবং প্রায় ৩ বছর কারাভোগ করেন। ১৯৮৩ সালের ১৫’ই ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে নির্যাতন করে তার ১৭ টি দাঁত ভেঙ্গে দেয়া হয়।
১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী কৃষকলীগের সভাপতির পদ লাভ করেন। ১৯৯০ সালের ২৯’শে নবেম্বর সরকারবিরোধী আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের হাতে গ্রেফতার হন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টিকেটে নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে (গাজীপুর-৩, শ্রীপুর-কালিয়াকৈর-১৯৬) সংসদীয় আসন থেকে বিপুল ভোটে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার কমিশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ২৩’শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিশেষ কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৯ সালের ২৮’শে ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ আলী (বি.কম) আরও বলেন, রাজনৈতিক জীবনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। মহান এ মানুষটি জীবনের সব কিছু উজার করে সততা, আন্তরিকতা, দেশপ্রেমের মাধ্যমে বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে কর্মী তৈরি করে গেছেন। নিরহঙ্কারী, শিক্ষানুরাগী, আদর্শ রাজনীতিবিদ ও সকলের পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিটি আমৃত্যু এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ব্যয় করেছেন।
২০২০ সালের ১৬’ই ফেব্রুয়ারি ইন্তেকাল করেন আজ (১৬’ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪) উনার (৪’র্থ) মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
Leave a Reply