রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর ব্যুরো প্রধানঃ
সারি সারি বেঞ্চ, আর সারি সারি পরীক্ষার্থী। কোনটাই নেই। এক কক্ষে একটি বেঞ্চ আর একটি টেবিলে বসে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা। পীরগাছা হাজী ছফের উদ্দিন সিনিয়র আলিম মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে শ্রুতি লেখকের সহযোগিতায় মুনিরা এবার দাখিল পরীক্ষা দেন।আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, হুমায়ুন কবির নামে একজন কক্ষ পরিদর্শক মুনিরার কক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।
পরীক্ষা চলাকালে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা মিয়া, কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরার পরীক্ষা দেখতে তার রুমে যান এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন।মুনিরার বাবা জাহাঙ্গির আলম ও মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘জন্ম থেকে আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী, মাস্টার যা বলেন আমার মেয়ে তা শুনে মুখস্থ করে। একবার শুনলে ওর মুখস্ত হয়ে যায়। আমার মেয়েকে সবাই যেন ভালো চোখে দেখেন, সবাই যেন তাকে সহযোগিতা করেন। ও যতদূর লেখাপড়া করতে চায় আমরা করাবো।তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা বলেন, অনেক প্রতিবন্ধী অবহেলার শিকার। অথচ কেউ আমাকে অবহেলা করছে না। আমার প্রতি শিক্ষকরা আন্তরিক। আমার বাবা—মাও আমাকে লেখাপড়া করিয়ে অনেকদুর নিয়ে যেতে চায়। আমি তাদের আশা পূরণ করতে এ বছর দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি।কক্ষ পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সে জন্ম থেকে অন্ধ। সে পরীক্ষায় খুবই সুন্দরভাবে অংশগ্রহণ করছেন।
একই মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত নাহমিদা আক্তার মাদরাসা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে তাকে সহযোগিতা করছে। শ্রুতি লেখক হিসেবে ওই শিক্ষার্থী প্রশ্ন পড়ে মুনিরাকে বলছেন, এবং পড়ে মুনিরা উত্তর বললে সে খাতায় লিখছে।জানতে চাইলে পীরগাছা হাজী ছফের উদ্দিন সিনিয়র আলিম মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব (ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা আমার মাদরাসা থেকে এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন। সে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হিসেবে অতিরিক্ত ২৫ মিনিট সময় বেশি পাবে। তার পরীক্ষায় যেন কোন সমস্যা না হয় আমরা সেদিকে খেয়াল রাখছি।
Leave a Reply