মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
ছোট বেলা থেকেই ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাস ব্যবহার করে নানা ধরনের খেলনা বানাতেন। এক সময় মাথায় আসে এসব দিয়ে যদি একটা রোবট বানানো যায়, যা মানুষের উপকারে আসে! সেই ভাবনা থেকে স্কুল ছাত্র ইমন তৈরি করেছেন রোবট, তার নাম রেখেছেন ওয়ালী ।
ইমতিয়াজ ইমন চলতি বছর ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করবে। ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর গ্রামের দন্ত টেকনিশিয়ান শাহজাদুল ইসলাম সাজু ও ছাবিনা ইয়াসমিনের বড় ছেলে ইমন।
ইমনের তৈরি রোবট বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। একই সাথে ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে গিয়ে ছবি তুলতে, ভিডিও ধারণ করতে এবং লাইভ ভিডিও করতে পারে।
ছোট বেলা থেকে বাড়ির বিভিন্ন খেলনা নষ্ট হয়ে গেলে, সেইসব খেলনার ডিভাইস খুলে পুনরায় নতুন নতুন খেলনা তৈরি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতো ইমন। এক সময় তার মাথায় আসে, খেলনা বানানোর চেয়ে মানুষের জন্য উপকারী রোবট বানালে অনেক বেশি ভালো হবে। সেই ভাবনা থেকেই স্কুল ছাত্র ইমতিয়াজ ইমন তৈরি করে ফেলেছে রোবট ওয়ালীকে। বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাসে সজ্জিত এক ফিট উচ্চতার রোবট ওয়ালী। ওয়ালীতে লাগানো বিশেষ সেন্সর ক্যামেরা, যা দিয়ে ছবি তুলতে, ভিডিও করতে এবং লাইভ দিতে পারে। ছবি ও ভিডিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে তোলার সাথে সাথে অপারেটরের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। তার এই আবিষ্কার এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ইমতিয়াজ ইমনের সাথে কথা বললে সে জানায়, ছোট বেলা থেকেই বাড়ির বিভিন্ন নষ্ট হয়ে যাওয়া খেলনার যন্ত্রাংশ দিয়ে পুণরায় নতুন নতুন খেলনা তৈরি করতাম। এক সময় মাথায় চিন্তা আছে যদি একটা রোবট তৈরি করা যায়, যা মানুষের কল্যাণে কাজ করবে। সেই থেকে একটু একটু করে একদিন একটা রোবট তৈরি করে ফেলি। ওর নাম রাখা হয় ওয়ালী। ইমন আরও বলে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবট ওয়ালী। রিমোট ও মোবাইল নিয়ন্ত্রিত এই রোবট ওয়ালী ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরে চলাচল করতে পারে। মানুষের মত আচরণ করতে পারে। মাথা ঘুরিয়ে সবাইকে দেখতে পারে। ওয়ালী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর নামসহ যেকোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। ছবি তুলতে ভিডিও করতে এবং লাইভ দিতে পারে। ওয়ালী ছবি, ভিডিও ধারণ করার সময় তৎক্ষনাত পরিচালনাকারীর মোবাইলে পাঠিয়ে দিতে পারে। ছবি বা ভিডিও ধারণ সর্ম্পকে রোবট ওয়ালীর আবিষ্কারক ইমন বলেন, কিছু জায়গায় আমরা যেতে পারি না বা কোথাও গেলে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে সেখানে ওয়ালী গিয়ে ছবি তুলে তৎক্ষনাত পাঠিয়ে দিতে পারবে।
ইমন আরও বলেন, এটি প্রাথমিক পর্যায়ে তৈরি করতে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এটি আরও বৃহৎ পরিসরে বানাতে গেলে খরচ একটু বেশি পড়বে। আমি সরকারের সহযোগিতা পেলে আরো নতুন নতুন ডিভাইস তৈরি করতে পারব। আমি অর্থের অভাবে নতুন কোন কাজে হাত দিতে পারছি না।
ইমনের বাবা দন্ত টেকনিশিয়ান শাহজাদুল ইসলাম সাজু বলেন, আমি প্রথমে চাইতামনা যে ছেলে এগুলো করুক। কিন্তু এখন দেখছি যা করছে তা মন্দ নয়। তার তৈরি রোবট যদি মানুষের কল্যাণে আসে তাহলে তো ভালই হয়। সহযোগীতা পেলে ছেলে আমার আরও ভাল কিছু করতে পারবে।
ফুলবাড়ী গোলাম মোস্তফা (জিএম) পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হোসেন জানান, আমি শুনেছি সে একটি রোবট তৈরি করেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত তার এমন আবিষ্কারে। সরকারি ভাবে সহযোগীতা পেলে সে আরও এগিয়ে যাবে।
প্রধান কার্যালয়, মিরপুর-১৩,ঢাকা
Copyright © 2025 দৈনিক অপরাধ তল্লাশি. All rights reserved.