মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দিগন্ত জুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে হলুদের আভা। ভালো ফসল পেতে শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সরিষার আবাদ অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি। আমন ধান কাটার পর থেকে ইরি বোরো ধান রোপণের আগ পর্যন্ত যেসব জমি পতিত অবস্থায় থাকত, এবার সেসব জমিতেও চাষ হচ্ছে সরিষা। শীতের জীর্ণতা ভেদ করে ধুসর মাঠে সরিষার সবুজ গাছে হলুদের মন মাতানো আভার সাথে কালো ভ্রমরের গুনগুন গানের সুর নজর কাড়ছে প্রকৃতি প্রেমীদের। সরিষা ফুলের মুগ্ধতায় তরুণ-তরুণীরা সেলফি তুলতে ভীড় করছেন জমিতে।
উপজেলার শিবনগর ইউপির দাদপুর এলাকার কৃষক আবুল কাশেম, শহিদুল ইসলাম, অহিনুর রহমান জানান, আমন ধান কাটার প্রায় ৯০ থেকে ১২০ দিন পর ইরি বোরো ধান রোপণ করা হয়। অন্যদিকে সরিষা ৭০ থেকে ৮০ দিনেই ঘরে তোলা যায়। অন্যান্য বছর ধানের এসব জমি পতিত থাকলেও এবার সরিষার আবাদ হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনা মূল্যে বীজ ও সার পেয়ে সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। এছাড়াও সরিষার পাতা জমিতে পড়ে উন্নতমানের জৈব সার হিসেবে কাজ করে। ফলে পরবর্তী ফসল চাষে রাসায়নিক সার কম লাগে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সরিষার চাহিদা বেড়েছে। ভালো দাম থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। সরিষা চাষে একদিকে যেমন তেলের ঘাটতি পূরণ করা যায়, অন্যদিকে উৎপাদনের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতেও অবদান রাখা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, সরিষার উৎপাদন বাড়াতে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে উপজেলার ৩হাজার ৯শ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে মোট ৩টন ৯শ কেজি সরিষার বীজ, ৩৯টন ড্যাব, ৩৯টন পটাশ সার বিতরণ করা হয়েছে। এ উপ জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৩৪৩ হেক্টর ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ১৮২৩ হেক্টর। একই ভাবে সরিষা ফুলের মধুর উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় এবছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে সরিষার আবাদ। এভাবে সরিষা উৎপাদন বাড়তে থাকল হয়ত তেল উৎপাদনে সুদিন ফিরবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
Leave a Reply