কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
খাল খননে কাপাসিয়ায় সড়ক ও ধানক্ষেত নষ্ট
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় জন সাধারণের চলাচলের সড়কের মাটি কেটে খালের পাড় বাধাই করা হচ্ছে।
খাল খননের মাটি ধানক্ষেতে ফেলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন ঠিকাদারকে এ বিষয়ে বাধা দিলেও তাতে তিনি কর্ণপাত করছেন না। এমনকি প্রশাসনের সহায়তা চেয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের ভিকারটেক গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় বানার নদের শাখা দরদরা খালটি এ গ্রামের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত। এ খালের ১ হাজার ২০০ মিটার জায়গাজুড়ে পর্যায়ক্রমে খনন কাজ চালাচ্ছে মেসার্স বি ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের অধীনে এ খনন কাজ চলছে। এই খালের দক্ষিণ পূর্ব পাড়ের প্রায় ১০ ফুট প্রশস্ত মাটির সড়কটি দিয়ে স্থানীয় বিকারটেক, ছেলদিয়া, কুশদি, বরজাপুর, পাচুয়া ও বারিষাব গ্রামের হাজার হাজার জন সাধারণ যুগ যুগ ধরে চলাচল করে আসছিলেন।
সম্প্রতি এ খাল খনন কাজ শুরু হলে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন এক্সকেভেটর দিয়ে এ সড়কের প্রায় আধা কিলোমিটারের মাটি কেটে খালের পাড় ভরাট করেছে এবং সড়কটি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। এ সড়কের দুপাশের শত শত আম,জাম, কাঠাল, তালসহ নানা ফলজ ও বনজ গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। খালের গভীরতা বৃদ্ধির চেয়ে পাড় ভরাটের দিকেই তাদের মনোযোগ বেশি। তাছাড়া নাম মাত্র খননের মাধ্যমে যে মাটি কাটা হচ্ছে তাও চলতি রোরো মৌসুমের আধা পাকা ধানক্ষেতে ফেলা হচ্ছে। ভিকারটেক গ্রামের লোকজনের একমাত্র চলাচলের সড়কটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় তারা নিরুপায় হয়ে পড়েছেন।
ভিকারটেক গ্রামের মো. মাইনউদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাজার হাজার মানুষের চলাচলের সড়কটি এ ভাবে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হলো এবং তাদের আধা পাকা ধানক্ষেতের উপর মাটি ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে, প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। বরং ঠিকাদারের লোকজন সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে তাদেরকে ফাসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। একই গ্রামের মো. রোকন মিয়া জানান, ঠিকাদারের লোকজন নামমাত্র খাল খনন করছে, খাল গভীর করা হচ্ছে না। তারা শুধু পাড় বাধাই করে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।
খাল খনন কাজে নিয়োজিত মেসার্স বি. ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মো. বাদল মিয়া জানান, বিএডিসির খাল খনন কাজে বরাদ্দ খুবই কম থাকে, যে কারণে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ি খাল খনন সম্ভব নয়। খালের পাশের সড়কটি কেটে নিচু না করা হলে পাড় বাধা সম্ভব ছিল না বলে তিনি সড়কটি কাটতে বাধ্য হয়েছেন। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে খাল খনন সম্ভব হবে না বিধায় এবং কোনো বিকল্প উপায় না থাকায় আধা পাকা ধান ক্ষেতে মাটি ফেলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম গোলাম মোর্শেদ খান জানান, স্থানীয় লোকজন ফোন করে তাকে সড়ক ও ফসল নষ্ট করার বিষয়ে জানিয়েছেন। বিষয়টি তিনি বিএডিসি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।বিএডিসি গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফারুক হোসেন জানান, সড়ক কাটার বিষয়ে তিনি দ্রুত খোঁজ নিবেন। খাল খননে অনিয়ম হলে ঠিকাদার বিল পাবেন না বলে জানান তিনি।
Leave a Reply