কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
‘আশ্রয়নের অধিকার-শেখ হাসিনার উপহার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারা দেশের ন্যায় গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ও গুণগত মান নিশ্চিত করতে ঘর পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম গোলাম মোর্শেদ খাঁন।
গতকাল ২০ মার্চ সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম গোলাম মোর্শেদ খাঁন ও ভূমি কর্মকর্তা ( এসিল্যান্ড) নাজমুল হুসাইন,ইন্জিনিয়ার মাঈন উদ্দিন বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করেও আশ্রয়ন প্রকল্পে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে ভূমিহীনদের গৃহ ও সুবিধাভোগী মানুষের সার্বিক খোঁজ খবর নেন।সেই সাথে ঘর নির্মাণে গুণগতমান ভালো রেখে কাজ চলমান রেখেছেন ইউএনও।
রায়েদ ইউনিয়ন আশ্রয় প্রকল্পের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম হিরন মোল্লা বলেন, বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি’র তত্বাবধানে আমাদের উপহারের ঘর মজবুত ও ভালোমানে নির্মাণ করেছেন ইউওনও স্যার। তিনি প্রতিদিন এসে কাজ পরিদর্শন করতেন।তাছাড়া স্যার না থাকলে ইঞ্জিঃ মাঈনউদ্দিন বা পিআইও কোহিনূর স্যার উপস্থিত থাকতেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ-রকম বর্তমানে ঘর নির্মাণ কাজ দেখে এখানে সকল মানুষ খুশি। আমাদের আশ্রয় প্রকল্পের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা কৃতজ্ঞতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন কেন্দ্রের উপকারভোগী বাসিন্দা রবিকুল ইসলাম বলেন,বর্ষা হলে কষ্টের শেষ ছিলো না ২ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাসমান ভাবে থাকতাম পাশ্ববর্তী একটি চরে। যেখানে বসবাসে দূর্ভোগের শেষ ছিলো না। সরকার খুঁজে এনে কোন টাকা ছাড়াই এখানে ঘর ও জমি দিয়েছে, আমি স্বপ্নেও ভাবিনি নিজেদের জায়গা নিজেদের বাড়ি হবে।খোলা আকাশের নিচে বছরের পর বছর থেকেছি। এখনো হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে উপরের দিকে চেয়ে দেখি খোলা আকাশ নয়, মাথার উপরে আশ্রয়নের টিনের ছাদ আছে।ইউএনও স্যার এত সুন্দর ঘর তৈরি করেছে। যা প্রশংসা পাওয়ার বিষয়। আমরা সরকারকে এবং উপজেলা ইউএনও স্যারকে ধন্যবাদ জানাই।
উপকারভোগী মাহমুদা বলেন, স্বপ্নেও ভাবিনি নিজেদের জায়গায় নিজেদের বাড়ি হবে। আমরা এখন বলতে পারি আমাদের নিজস্ব ঘর আছে। আমরা সরকারকে এবং বঙ্গতাজ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি এমপি আপা ও উপজেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই। এখন আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য একটা স্কুলের ব্যবস্থা করলেই হয়। সরকারের কাছে আর আমাদের কোন চাওয়া পাওয়া নেই।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘরের গুণগত মান নিশ্চিত করতে ভালো মানের রড, সিমেন্ট, কাঠ, বালু, টিন ইত্যাদি’র ব্যবহার করা হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘুরতে আসা দর্শনাথীদের মুখে মুখে ঘর নির্মানের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে শুধু ঘর নির্মানেই ইউএনও একেএম গোলাম মোর্শেদ খাঁন প্রশংসা কুড়িয়েছেন, নানা কার্যক্রমের পাশাপাশি উপকার ভোগী সকলের সমন্বয়ে সমবায় সমিতি করে দেন তাদেরকে।
তিনি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঘুরে বেড়ান উপজেলার প্রত্যান্ত এলাকা গুলোতে। খোঁজ খবর নেন অসহায় মানুষদের। সুবিধা বঞ্চিতদের অভিযোগ শুনেন ধৈর্য্যরে সাথে। ব্যবস্থাও নেন তড়িৎ গতিতে। খুব অল্প সময়ে সাধারন মানুষের মনে ভালোবাসার জায়গা করে নিয়েছেন ইউএনও। তাছাড়া মানুষের অধিকার ও আইনি সেবা দিতে সব সময় চৌকশ ভূমিকা পালন করছেন। কাপাসিয়া উপজেলার ইতিহাসে যা খুব অল্প সময়ে এক অনন্য নজির গণমাধ্যম, ফেসবুক এবং মুঠোফোনের মাধ্যমে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ দ্রুত সমাধান ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন তিনি। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সেবা,কোভিড ১৯ জনগণকে সচেতন করে তোলা,অসহায়দের শীর্ততদের মাঝে কম্বল বিতরণ মহতি উদ্যোগ নেয়া এবং মানবিক বেশ কিছু কর্মকাণ্ডের জন্য সর্বমহলে হয়েছেন ব্যাপক প্রশংসিত।
এ বিষয়ে (ইউএনও) বলেন,প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণসহ যাতায়াতের জন্য ৬৩ লক্ষ টাকা ব্যয় এ সংযোগ সড়ক করে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘরে আশ্রয়া পাওয়াদের অধিকাংশই রাস্তার ধারে ফুটপাত বা কারও আশ্রয়ে বসবাস করতেন। বর্তমান সরকারের নির্দেশনা রয়েছে দেশে কোন ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকতে পারবে না। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করতেছি।
আমরা সরকারে প্রতিনিধি। জনগনের সেবক। সব সময় অসহায়,সাধারন মানুষের পাশে আমরা আছি থাকবো।
তিনি আরও বলেন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে উপজেলায় ১ম- তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত সর্বমোট ৩১৮টি গৃহহীন ও ভুমিহীন পরিবারকে জমি সহ গৃহ প্রধান করা হয়েছে। আগামী ২২মার্চ প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপকারভোগীর কাছে এসব গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ও জেলাকে ভুমিহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন।
Leave a Reply