ক্রাইম রিপোর্টারঃ
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় মাওনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি কংকন কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাওনা হাইওয়ে পুলিশের কয়েক সদস্য। রাতের বেলা পণ্যবাহী ট্রাক আটকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। অবৈধ টমটম ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ভ্যানগাড়ী আটক করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করেন হাইওয়ে সড়কে অবৈধ অটো, টমটম, ভ্যানগাড়ী, সিএনজি এবং ফুটপাতে অবৈধ বাজার বসিয়ে শতশত দোকানের টাকা দিলেই বৈধ বলে অভিযোগ করেন চালক ও দোকানদার। ১৬ কিঃমিঃ সড়কের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে রামবাজত্ব অবৈধ উৎকোচ বাণিজ্য হরহামেশায় ঘটে চলছে রুখবে কে?
ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাতের বেলায় ১৬কিঃমিঃ প্রবেশ পথের নতুন বাজার হতে জৈনা বাজার নাছিরের কাটা এলাকায় বিভিন্ন যানবাহন আটক করে চাঁদা আদায় করছেন তারা। তবে অভিযোগ রয়েছে, গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় বাজারের ইজারাদার জাফরের মধ্যস্ততায় খুব কৌশলে টাকার বিনিময়ে রাতের বেলায় রফাদফা করে আটককৃত গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই ইজারাদার জাফর হাইওয়ে ওসির বিশ্বস্ত দালাল বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অটো এবং সিএনজি চালক সুলতান, সাগর, দেলোয়ার, সুরুজ, বিল্লাল, আক্তার, নাজমুল, আনোয়ার, জাকির, মারফত, মোশারফ, রহিম, দিলকুল, রাসেল, নুর ইসলাম, বকুল, সাদ্দাম এরা সকলেই অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর দিয়ে ঘুষের টাকা দিয়ে যে যার অটো সিএনজি ছাড়িয়ে নিয়েছে। এদের বক্তব্যের অভিযোগে জানাযার, মাওনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি কংকন কুমার বিশ্বাস যোগদান করার পর থেকেই হয়রানি আর চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে মাওনা হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা। মাওনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি কংকন বিশ্বাসের ডান হাত হিসেবে কাজ করেন থানার কনস্টেবল মোবারক হোসেন। ওসি কংকন কুমারের নির্দেশেই চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন হাইওয়ে পুলিশের এ সদস্য।
সোহেল নামে এক ব্যাবসায়ী বলেন, গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি ঢাকা ময়মনসিংহ হাইওয়ে মহাসড়কে ফুটপাত বসিয়ে প্রতিদিন ২০০ থেকে ২২০ টাকা করে ১০০ দোকানির কাছে থেকে চাঁদা আদায় করে ওসি কংকনের বিশ্বস্ত দালাল জাফর। এছাড়াও জাফরের ৩০/৪০ টি অটোরিক্সা চলে মহাসড়কে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা মাসোহারাতে। বিভিন্ন পয়েন্টে ওসির কংকনের বিশ্বস্ত দালাল চক্র রয়েছে। এছাড়া মাওনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভার উড়ালসেতু নিচে ফুটপাতে দোকান বসিয়ে মাসিক এডভান্স ১৫শত টাকা এবং প্রতিদিন ৫০ টাকা করে তুলেন কনস্টেবল মোবারক হোসেন। মিলন নামের অটোরিক্সা ড্রাইভার নিয়ন্ত্রণ করেন মাওনা চৌরাস্তা থেকে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি পর্যন্ত ১৯০ টি ব্যাটারি চালিত ভ্যান ১০০০ টাকা করে ও ২৯টি সিএনজি ৪০০০ টাকা করে মান্থলিতে। মিলনের বিষয়ে জানাযায় ওসি কংকন বিশ্বাসের অত্যান্ত বিশ্বস্ত তিনি ওসির মেয়েকে নিয়ে স্কুলে আনা-নেওয়া কাজটি করেন। গ্যাস সোহেল নামে আরেক লাইন ম্যান ঢাকা ময়মনসিংহ হাইওয়ে রোডে ২৫/৩০ টি অটোরিক্সা চলে মান্থলিতে এডভান্স ২০ হাজার টাকা করে মাসিক ৯ হাজার টাকা অটোরিক্সা চালকদের কাছে থেকে নেন। এদের গাড়ি ব্যতিত রোগী নিয়ে আসা যানবাহন হাইওয়ে পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়। কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই তারা গাড়ি থামিয়ে অবান্তর প্রশ্ন করেন। আবার হাইওয়ে পুলিশের দাবি করা টাকা দিয়ে দিলে কোনো কাগজপত্র না থাকলেও গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জৈনা বাজার, নয়নপুর বাজার, এমসি বাজার, মাওনা অবদামোড়, মাওনা চৌরাস্তা, ২নং সিএন্ডবি, আনসার রোড ও গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি ঢাকা ময়মনসিংহ হাইওয়ে মহাসড়কে বাজার বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করছে মাওনা হাইওয়ে পুলিশ।
তথ্য প্রমাণ মোতাবেক দেখা যায়, থানার মুন্সি মাহবুবকে দিয়ে কম্পিউটারে অঙ্গীকার নামা বানিয়ে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি অটোরিক্সা চালক ও সিএনজি চালকদের কাছে থেকে ২৭ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে অঙ্গীকার নামায় সাক্ষর রেখে গাড়ি গুলো ছেড়ে দিচ্ছেন। এবিষয়ে মুন্সি মাহবুবের ফোনে একাধিক কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
ওসি কংকন কুমারের আরেকজন বিশ্বস্ত নায়েক মুকাবির মাওনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভার উড়ালসেতু নিচে দ্বায়িত্বে থাকা অটোরিক্সা ও সিএনজির মামলা রুজু ছাড়াও মামলা না নিয়ে চালকদের তালিকা করে অসহায় চালকের কাছে থেকে টাকা নিয়েছে এমন হিসেবের কাগজে তার স্বাক্ষর দেখা গেছে।
ওসির জরুরি ডিউটি ও রকার ডিউটিতে ১৫ থেকে ২০জন ফর্মা নিয়ে কাজ করেন এবং প্রতি ফর্মার বেতন ৫০০ টাকা করে দিয়ে থাকেন বলে জানা যায়।
এছাড়া রাতের বেলা ট্রাক থামিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চলে। ট্রাক ড্রাইভার করিম বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে মাল নিয়ে আসি আবার ফিরতি পথে কাঁচামাল আর অন্যান্য মালামাল নিয়ে যাই ঢাকায়। কিন্তু মাওনা হাইওয়ে পুলিশের হয়রানিতে অতিষ্ঠ আমার মতো আরও হাজারো ট্রাক ড্রাইভার।
এবিষয়ে মাওনা হাইওয়ে ওসি কংকন কুমার বিশ্বাসের কাছে বক্তব্য জানতে চাইলে, তিনি রেগে গিয়ে বলেন আপনি কিসের সাংবাদিক থানায় আসেন কথা বলবো এই বলে ফোন রেখে দেন।
Leave a Reply